অন পেজ এসইও কি? কিভাবে অন পেজ এসইও করতে হবে জানতে পড়ুন

অন পেজ এসইও কি? কিভাবে অন পেজ এসইও করতে হবে এই বিষয়ে জানতে চান? তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসে পড়েছেন। কারণ আজকের এই আর্টিকেলেঅন পেজ এসইও কি এবং 

কিভাবে অন পেজ এসইও করতে হবে এই সম্পর্কে সকল তথ্য আপনাদের মাঝে আলোচনা করা হবে। অন পেজ এসইও সম্পর্কে জানতে হলে আজকের এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ার অনুরোধ রইলো।

.

এসইও কি

এসইও (SEO)  এর পূর্ণরূপ  সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (Search Engine Optimization)। অর্থাৎ আপনার কনটেন্টকে আপনি যখন কোন সার্চ ইঞ্জিনের জন্য অপটিমাইজ করবেন, তখন এই অপটিমাইজ করার প্রক্রিয়ায় হলো সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন। 

আরোও পড়ুনঃ ম্যাকবুক কেনার আগে যেগুলো বিষয় জানা প্রয়োজন 

আরো সহজভাবে এসইও বলতে বোঝায়, আমরা যখন গুগল বা অন্য কোন সার্চ ইঞ্জিনে কোন কিছু লিখে সার্চ করি, তখন সেই সার্চ ইঞ্জিন আমাদের সামনে অনেকগুলো ওয়েবপেজ দেখায়। আমরা সাধারণত রেংকিংয়ের প্রথম সারির ওয়েবসাইট গুলোতে যাব। সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন করা হয় ওয়েবসাইট গুলোকে প্রথম সারিতে নিয়ে আসার জন্য।

অন পেজ এসইও কি 

অন পেজ এসইও হল কোন ওয়েব পেজের অর্গানিক ট্রাফিক বাড়ানোর জন্য ওয়েব পেজের ভেতরের উপাদান (টেক্সট, ইমেজ ইত্যাদি) কে সার্চ ইঞ্জিনের জন্য অপটিমাইজেশন। ওয়েবসাইটের ভেতরে কাজ হল অন পেজ এসইও। একটি ওয়েবসাইটের কনটেন্ট, মেটা ডেটা এবং কোডের অভ্যন্তরী উপাদান গুলো সার্চ ইঞ্জিন ফ্রেন্ডলি করার প্রক্রিয়াকে বোঝায়। 

অনেক সময় অন পেজ এসইও ওয়ান সাইট এসইও বলা হয়। এসইও করা হয় কিওয়ার্ড এর বিপরীতে সার্চ ইঞ্জিন রেজাল্ট বা ফলাফল (SERP) এর প্রথম পৃষ্ঠায় র‍্যাঙ্কিং করা। অন পেজ এসইও করার মূল উদ্দেশ্য হলো google এবং অন্য সার্চ ইঞ্জিন গুলো যেন আপনার কনটেন্ট গুলো ভালোভাবে বোঝাতে পারে এবং সেটাতে তাদের সহায়তা করা।

অন পেজ এসইও কিভাবে করতে হবে

ওয়েবসাইটের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে  অন পেজ এসইও করা। অন পেজ এসইও সার্চ ইঞ্জিনের রেংকিংয়ের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। অন পেজ এসইও  ছাড়া একটি ওয়েবসাইটকে কখনো  র‍্যাংকে আনা সম্ভব না। তাই ওয়েবসাইটকে র‍্যাংক এ আনার জন্য অন পেজ এসইও করতে হবে। চলুন অন পেজ এসইও কিভাবে করতে হবে জেনে নিই--

কিওয়ার্ড রিসার্চঃ
গুগল সার্চ ইঞ্জিন কিংবা অন্যন্য সার্চ ইঞ্জিনে একটি কনটেন্ট  র‍্যাংক করানো অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ। মানুষ google এ যা কিছু লিখে সার্চ করে সেটাই হলো কিওয়ার্ড। কনটেন্টকে দ্রুত র‍্যাঙ্ক করার জন্য কিওয়ার্ড খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিওয়ার্ড মূলত দুই প্রকার হয়ে থাকে। 

এগুলো হলো শর্ট টেইল কিওয়ার্ড ও লং টেইল কিওয়ার্ড। সার্চ ইঞ্জিনের দ্রুত রান করার জন্য লং টেইল কিওয়ার্ড গুলো খুবই ভালো। কিওয়ার্ড রিসার্চ করার জন্য ইন্টারনেটে বিভিন্ন ধরনের ফ্রি এবং পেইড টুলস পাওয়া যায়। এগুলো হলো-- - Ahrefs, Ubersuggest, Keyword Surfer, Whatsmyserp, Google Keyword Planner, Google Search Console।

টাইটেল ও সাবটাইটেল অপটিমাইজেশনঃ
গুগল সার্চে ওয়েবসাইটের কনটেন্টগুলো দ্রুত দেখানোর জন্য টাইটেল ও সাবটাইটেল অপটিমাইজেশন করা প্রয়োজন। ওয়েবসাইটের কনটেন্ট গুলোর টাইটেল ও সাবটাইটেল গুলো লিখতে হবে সম্পূর্ণ এসইও ফ্রেন্ডলিভাবে। টাইটেল গুলো যেন ৬০ ক্যারেক্টার বেশি না হয়। চেষ্টা করবেন এটি যেন সব সময় ৫০-৫৬ ওয়ার্ড এর মধ্যে থাকে।

ইমেজ অপটিমাইজেশনঃ
ইমেজ অপটিমাইজেশন ওয়েবসাইট অন পেজ এসইও এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আপনার ওয়েবসাইটের আর্টিকেল গুলোতে ইমেজগুলো এমন ভাবে যুক্ত করতে হবে যাতে ইমেজগুলোর সাইজ খুব কম হয়। চেষ্টা করবেন ইমেজের সাইজ গুলো সব সময় ২০-৩০ কিলো বাইরের মধ্যে রাখার। ইমেজে সাইজ কমবেশি করতে পারেন  Image Compressor টুলস ব্যবহার করে। ইমেজের ফরম্যাট Jpeg, Png ও Webp তে রাখতে পারেন।


ইন্টার্নাল লিঙ্কঃ
ইন্টার্নাল লিংক ওয়েব সাইটে অন পেজ এসইও করার জন্য প্রয়োজন। ওয়েবসাইটের ভিজিটর বা দর্শক বৃদ্ধিতে সাহায্য করে থাকে ইন্টার্নাল লিংক। internal link করার জন্য আপনার ওয়েবসাইটের যেকোনো আর্টিকেলের লিঙ্ক এই আর্টিকেলে যুক্ত করতে পারেন। এটাই হচ্ছে ইন্টার্নাল লিংক করার মাধ্যম।

এক্সটার্নাল লিংকঃ
বহিরাগত লিংক এ সাধারণত এক্সটার্নাল লিঙ্ক বলা হয়। এক্সটার্নাল লিঙ্ক হলো আপনার ওয়েবসাইটের সাথে অন্য কোন ওয়েবসাইটের লিংক কপি করে আপনার আর্টিকেলের সঙ্গে যুক্ত করা। এটাই হল এক্সটার্নাল লিংক।

কিওয়ার্ড ডেনসিটিঃ
কিওয়ার্ড ডেনসিটি বলতে বোঝায় কোন আর্টিকেলে ফোকাস কি ওয়ার্ডের পরিমাণ বা ঘনত্ব। অর্থাৎ একটি আর্টিকেলের মধ্যে ফোকাস কিওয়ার্ড কতবার ব্যবহার করা হয়। অন পেজ এসইও করার ক্ষেত্রে কিওয়ার্ড ডেনসিটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। 

অনেক বেশি কিওয়ার্ড যদি আপনার আর্টিকেলের মধ্যে ব্যবহার করেন তাহলে সার্চ ইঞ্জিন ভালোভাবে নেবে না। আবার কিওয়ার্ড যদি কম পরিমাণে ব্যবহার করেন তাহলে তা র‍্যাঙ্ক করবে না। এজন্য প্রতি হাজার শব্দের জন্য মূল কিওয়ার্ড ৮-১০ ব্যবহার করা যেতে পারে।

পার্মালিংক অপ্টিমাইজেশনঃ
পার্মালিংক হলো আপনার কোনো আর্টিকেলের URL। কোন আর্টিকেলের র‍্যাংক করানোর জন্য পার্মালিংক  খুবই জরুরী। এর জন্য সঠিকভাবে পার্মালিংক লিংক লেখা জানতে হবে। আর্টিকেলে ফরমালিনক লেখার সময় যে সব বিষয় খেয়াল রাখতে হবে--

 পার্মালিংক ছোট রাখতে হবে
 পার্মালিংক মূল ফোকাস কিওয়ার্ড দিতে হবে।
 পার্মালিংক একাধিক ওয়ার্ড থাকলে সেগুলোর মাঝে হাইপেন দিতে হবে। যেমনঃamlokir-upokarita-ki

মেটা ডেসক্রিপশনঃ
কোন আর্টিকেল  র‍্যাঙ্ক করার জন্য মেটা ডেস্ক্রিপশন অত্যন্ত জরুরী। মেটা ডেসক্রিপশনহলো সার্চ ইঞ্জিনে আপনার ওয়েবসাইট ও পোস্টকে সংক্ষিপ্ত আকারে বিবরণ দেওয়া। মেটা ডেসক্রিপশন সাধারণত HTML ট্যাগে হয়ে থাকে।

সাইডের সাইডের স্পিড অপটিমাইজেশনঃ
সাইটের স্পিড অপ্টিমাইজেশন হল অন পেজ এসইও টেকনিক্যাল পার্ট। কোন ওয়েবসাইটের যদি লোডিং টাইম বেশি হয় তাহলে সে ওয়েবসাইটে কখনোই ভিজিটর প্রবেশ করবে না। বরং সে সাইডের ভিজিটর সংখ্যা কমে যাবে। এজন্য সাইটের স্পিড অপ্টিমাইজেশন করা জরুরী।

সঠিক কিওয়ার্ড নির্বাচন করার কৌশল

 মানুষ google এ যা কিছু লিখে সার্চ করে সেটাই হলো কিওয়ার্ড।  আপনার ব্যবসা এবং টার্গেট মার্কেটের সাথে সবচেয়ে প্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ড সনাক্ত করা গুরুত্বপূর্ণ। সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং আপনার নিশের সাথে সম্পর্কিত কিওয়ার্ডগুলো সনাক্ত করতে আপনি বিভিন্ন ধরনের টুলস ব্যবহার করতে পারেন।  আপনি Google AdWords এর মতো বিভিন্ন টুলস ব্যবহার করতে পারেন। 

আপনার প্রতিযোগীদের ফলো করা উচিত তারা কোন কিওয়ার্ড ব্যবহার করছ। আপনার প্রতিযোগী কোন কিওয়ার্ড ব্যবহার করছে সেটা বের করতে Ahrefs, Ubersuggest, Keyword Surfer, Whatsmyserp, Google Keyword Planner, Google Search Console এর মত টুলস ব্যবহার করতে পারেন। আপনি আপনার সঠিক কিওয়ার্ডগুলো শনাক্ত করার পরে সেগুলি আপনি আপনার ওয়েবসাইটে, ব্লক পোস্ট এবং অন্যান্য কন্টেন্টে ব্যবহার করে অনলাইনে দৃশ্যমানতা এবং আপনার ওয়েবসাইটে অনেক ট্রাফিক আনতে পারবেন।

টাইটেল ট্যাগ কিভাবে অপটিমাইজেশন করা যায় 

সার্চ ইঞ্জিনকে টাইটেল ট্যাগ নির্দেশ দেয় ওয়েব পেজটি কি? টাইটেল ট্যাগ দেখে ভিজিটররা বুঝতে পারে যে ওয়েবপেজটি কি এবং কেন ভিজিট করা প্রয়োজন। একটি অপ্টিমাইজড করার টাইটেল ট্যাগ অবশ্যই সংক্ষিপ্ত হওয়া উচিত তাতে অবশ্যই ফোকাস কিওয়ার্ড রাখতে হবে। 

মোট কথা হল ওয়েব পেজের বিষয়বস্তু যেন টাইটেল ট্যাগের মধ্যেই থাকে। একটি ওয়েব পেজের বিষয়বস্তু যেন টাইটেল ট্যাগ দেখে অনুমান করা যায়। টাইটেল ট্যাগ ভালো মানের এবং সাজানো গোছানো হলে ক্লিক থ্রু রেট CTR বৃদ্ধি পাবে। এবংসার্চ ইঞ্জিনে আপনার ওয়েবসাইট রেংকিং এ অনেক ভালো করবে।

ইমেজ অপ্টিমাইজেশন করার পদ্ধতি

ওয়েবসাইট বা ব্লগ সাইট কে SEO ফ্রেন্ডলি করতে ছবির আকার, আকৃতি, সাইজ কোয়ালিটির যে পরিবর্তন করা হয় বা কমিয়ে আনা হয় তাকে ইমেজ অপটিমাইজেশন পদ্ধতি বলে। গুগলে ভিজিটররা আর্টিকেলের থেকে বেশি ইমেজ সার্চ করে থাকেন। প্রতিনিয়ত কোন না কোন বিষয় সার্চ করার জন্য ইমেজটা অতি গুরুত্বপূর্ণ। 
আপনি যদি আপনার ওয়েবসাইটের ইমেজটা একবার ভালো মানের এসইও করতে পারেন। তাহলে আপনার সাইডে ভিজিটর আসতে বাধ্য হবে। ইমেজের সাইজ গুলো সব সময় ২০-৩০ কিলো বাইরের মধ্যে রাখার। ইমেজে সাইজ কমবেশি করতে পারেন  Image Compressor টুলস ব্যবহার করে। ইমেজের ফরম্যাট Jpeg, Png ও Webp তে রাখতে পারেন।

লেখকের শেষ মন্তব্য 

প্রিয় পাঠক অন পেজ এসইও কি? কিভাবে অন পেজ এসইও করতে হবে এই বিষয়ে আপনি বিস্তারিত ভাবে জানতে পেরেছেন। আশা করি আজকের এই আর্টিকেল পড়ে আপনি অন পেজ এসইও সম্পর্কে সকল পূর্ণাঙ্গ জ্ঞান লাভ করতে পেরেছেন। যদি আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার পরিবার এবং বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিবেন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url