প্রফেশনাল ফাইবার একাউন্ট খোলার নিয়ম কারণ সহ সকল কিছু

প্রিয় পাঠক আপনি কি প্রফেশনাল ফাইবার অ্যাকাউন্ট খোলার নিয়ম নিন জানতে চান? তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। কারণ আজকের এই আর্টিকেলে প্রফেশনাল ফাইবার একাউন্ট খোলার নিয়ম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। 

আপনি যদি আজকের এই আর্টিকেলটি মনোযোগসহ পড়েন তাহলে প্রফেশনাল ফাইবার একাউন্ট খোলার এবং ফাইবার মার্কেটপ্লেস সম্বন্ধে সকল তথ্য জানতে পারবেন। তাহলে চলুন শুরু করা যাক।

.

ফাইবার কি? 

ফাইবার ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস গুলোর মধ্যে এখন বেশ জনপ্রিয়। । এটি Upwork বা Freelancer মার্কেটপ্লেসের মত না। ফাইবারে আপনাকে কাজে এপ্লাই করতে হয় না। বায়ার আপনাকে এখান থেকে খুজে নিবে। আর আপনাকে দিয়ে কাজ করাবে। আপনি যদি কোন কাজে খুব ভালো দক্ষ হয়ে থাকেন তাহলে বায়ার আপনাকে কাজ শেষ করে টাকা প্রদান করবে। 
তাহলে আপনাকে সে বিষয়ে ফাইবার গিগ খুলতে হবে। আপনার গিগ দেখে বায়ার আপনাকে পছন্দ করলে আপনাকে সে অনুযায়ী কাজ দিবে। আপনি যদি খুব ভালোভাবে কাজ করে দিতে পারেন তাহলে কার থেকে আপনাকে টাকা প্রদান করবে। এভাবে ফাইবার থেকে টাকা আয় করতে পারবেন।

ফাইবার গিগ কি? 

একটি নির্দিষ্ট কাজ বা পরিষেবা হচ্ছে ফাইবার গিগ। এটি সাধারণত একজন ফ্রিল্যান্সার তার দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতার বিনিময়ে প্রদান করে থাকে। বিশ্বব্যাপী ডিজিটাল মার্কেটপ্লেস হচ্ছে ফাইবার। ফাইবারে সার্ভিসের পুরো প্রোফাইলকে গিগ বলা হয়। 

অর্থাৎ একজন ফ্রিল্যান্সার তার সার্ভিস কি দামে বিক্রি করবেন, কি কি অফার দিবেন, কি কি এক্সট্রা সুবিধা দিবেন এ সকল বিষয়ে যে পেজের মাধ্যমে বর্ণনা করা হয় তাকে গিক বলা হয়। প্রতিটি গিগ ৫ ডলার থেকে শুরু করে হাজার ডলার পর্যন্ত হয়ে থাকে। সাধারণত বেশি দামের সেল গুলো বেশি উন্নত মানের সার্ভিস দিয়ে থাকে।

ফাইবার কি বাংলাদেশের সকল মার্কেটপ্লেস এর মধ্যে সেরা 

ফাইবার পৃথিবীর যত ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস আছে এদের মধ্যে সেরা। ফাইবারে কাজ করে অনেকেই তাদের জীবিকা নির্বাহ করছে। আমাদের দেশের হাজার হাজার বেকার তরুণ ও তরুণীরা এই মার্কেটপ্লেসে কাজ করছে। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া ইত্যাদি দেশের লোকজন এখানে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতে পারছেন। এখন দেখে নিন কি কি কারণে ফাইবার মার্কেট প্লেসে সেরা--

প্রচুর পরিমাণ ও বিভিন্ন ক্যাটাগরির কাজ পাওয়া যায় ফাইবারে।

এখানে কাজে এপ্লাই করার কোন ঝামেলা নেই। ফাইবারে আপনি নিজের গিগ তৈরি করলে বায়ার আপনাকে খুঁজে নিবে।

ফাইবারের কাজে এপ্লাই করতে কোন প্রকারের টাকা খরচ করতে হয় না।

অনেক ব্যবহারযোগ্য এদের ওয়েবসাইট ইন্টারফেস।
 
ফাইবারে একবার কাজ পেলে কাজের কোন অভাব হয় না।

ফাইবার থেকে প্রচুর টাকা আয় করা যায়। আর এখান থেকে আয়কৃত টাকা খুব সহজে উত্তোলন করা যায়।

ফাইবার অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য কি কি প্রয়োজন হতে পারে

ফাইবার অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য কি কি প্রয়োজন হতে পারে আমাদেরকে এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো জানতে হবে। ফ্রিল্যান্সিং কাজের জন্য আমরা সাধারণত মার্কেটপ্লেসে অ্যাকাউন্ট খুলে থাকি। কিন্তু যে কোন মার্কেটপ্লেসে অ্যাকাউন্ট খুলতে হলে অবশ্যই বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিতে হবে। এই তথ্যগুলো দেওয়ার জন্য অবশ্যই আমাদের সাথে বেশ কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র রাখতে হবে। যেমন--

ফাইবার অ্যাকাউন্ট খুলতে হলে অবশ্যই অ্যান্ড্রয়েড ফোন, কম্পিউটার অথবা ল্যাপটপ থাকতে হবে। এইসব ডিভাইসের সাথে ইন্টারনেট সংযোগ থাকা লাগবে।

ব্যক্তিগত তথ্যগুলো সঠিকভাবে দিতে হবে। এই তথ্যগুলো দেওয়ার জন্য সাধারণত জাতীয় পরিচয় পত্র অথবা আমাদের গুরুত্বপূর্ণ সনদ যেমন সার্টিফিকেট সঙ্গে রাখতে হবে।

যে অ্যাকাউন্ট খুলবে অবশ্যই তার পাসপোর্ট সাইজের প্রফেশনাল ছবি সঙ্গে রাখতে হবে।

অ্যাকাউন্ট তৈরির জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে সচল মোবাইল নাম্বার। তাছাড়া ফাইবার অ্যাকাউন্ট শক্তিশালী হবে সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন ধরনের অ্যাকাউন্ট দিলে। 

ফাইবারে কাজ করার জন্য কি কি দক্ষতা প্রয়োজন রয়েছে 

ফ্রিল্যান্সিং সার্ভিস এর মধ্যে ফাইবার হল বিশ্বের সবচেয়ে বড় অনলাইন মার্কেটপ্লেস। ফাইবার হচ্ছে ফ্রিল্যান্সিং জগতে সবচেয়ে বড় প্ল্যাটফর্মম। এখানে বিভিন্ন ধরনের কাজ পাওয়া যায়। ফাইবারে কাজ করার জন্য বিভিন্ন ধরনের দক্ষতার প্রয়োজন হয়। 

আপনি কোন ধরনের সার্ভিস চান তার ওপর নির্ভর করে। ফাইবারে সফল হওয়ার জন্য সাধারণভাবে কিছু মৌলিক দক্ষতা থাকা প্রয়োজন। যেমন-- যোগাযোগ দক্ষতা, সমস্যার সমাধান করার ক্ষমতা, সময় ব্যবস্থাপনা অবশ্যই যে কাজের জন্য বিল তৈরি করেছেন সে বিষয়ে দক্ষতা।

প্রফেশনাল ভাবে ফাইবার অ্যাকাউন্ট খোলার নিয়ম 

আপনি যদি ফাইবারে কাজ করে লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই প্রফেশনাল ভাবে ফাইবার অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। কিভাবে ফাইবার অ্যাকাউন্ট খুলবেন এ বিষয়ে সম্পর্কে যদি জেনে না থাকেন তাহলে চলুন জেনে নিয়ে প্রফেশনাল ভাবে ফাইবার এখন খোলার নিয়ম গুলো--

ফাইবার এখন খোলার জন্য অবশ্যই আপনার একটি স্মার্ট ফোন, ল্যাপটপ বা কম্পিউটার থাকতে হবে। স্মার্ট ফোন কিংবা কম্পিউটার থেকে ক্রোম ব্রাউজার প্রবেশ করতে হবে।

এরপর সার্চবারে গিয়ে  Fiverr.com লিখে ক্লিক করতে হবে। দেখবেন আপনার সামনে একটি পেজ চলে এসেছে সেই পেজের ওপর ডান পাশে লিখা রয়েছে Join  নামক একটি বাটন সেটিতে আপনাকে ক্লিক করতে হবে।

জয়েন বাটনে ক্লিক করার পর দেখবেন একটি নতুন পেজ ওপেন হয়েছে এবং সেগুলোতে আপনি নিচে যে অপশনগুলো রয়েছে তার মত ফাইবার একাউন্ট সাইন আপ করার জন্য বিভিন্ন ধরনের অপশনগুলো পাবেন। Continue with Facebook, Continue with Google,Continue with Apple,Email।

উপরে উল্লেখিত ইমেইল ব্যতীত ওপরে যে তিনটি অপশন রয়েছে যেকোনো একটিতে ক্লিক করলেই ফাইবার অ্যাকাউন্ট অটোমেটিক ভাবে তৈরি হয়ে যাবে এবং দেখবেন সরাসরি ফাইবার ড্যাশবোর্ডে রয়েছে সেখানে নিয়ে যাবে।
আপনি যদি কন্টিনিউ বাটনে ক্লিক করেন তাহলে দেখবেন আরেকটি নতুন পেজ নিয়ে চলে আসবে। সেখানে দেখতে পাবেন Choose a Username and Choose a Password নামক বক্স। সেই বক্সে একটি শক্তিশালী পাসওয়ার্ড দিতে হবে।

ইউজার নেম এবং শক্তিশালী পাসওয়ার্ড দেওয়ার পর জয়েন বাটনে ক্লিক করে থাকেন তাহলে ফাইবার থেকে আপনাকে একটি লিংক পাঠানো হবে। এটা মূলত ফাইবার একাউন্ট ভেরিফাই পদ্ধতি। তবে ভেরিফাই করার সময় অবশ্যই সাইন আপ করার সময় যে জিমেইল একাউন্টটা দিয়েছিলেন সেই একাউন্টে প্রবেশ করতে হবে। তারপর একটিভ অ্যাকাউন্ট বাটনে ক্লিক করতে হবে এবং আপনার অ্যাকাউন্ট ভেরিফাই হয়ে যাবে।

গিগ তৈরি করার পূর্বেই আপনার প্রোফাইলটি সম্পূর্ণ করা উচিত। প্রোফাইলে আপনার নাম বিভিন্ন ধরনের অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতা নিজের সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করুন। এছাড়াও আপনাকে বিভিন্ন ধরনের স্কিল টেস্ট দিতে হবে। আপনার ব্যাংক একাউন্টে আপনার ভাষা এবং লোকেশন সিলেক্ট করতে হবে।

ফাইবারে কি কি ধরনের কাজ করা যায় 

ফাইবার একটি অন্যতম সেরা মার্কেটপ্লেস। ফাইবারের প্রায় ৭০০ ক্যাটাগরির কাজ পাওয়া যায়। এখানে পেমেন্ট খুব সহজে উত্তোলন করা যায়। ফাইবারের টাকা হারানো নিয়ে কোন চিন্তা করতে হয় না। আপনার কোন সমস্যা হলে ফাইবারে ২৪ ঘন্টা সাপোর্টের ব্যবস্থা রয়েছে। চলুন জেনে নিন ফাইবারে কি কি ধরনের কাজ করা যায়--

  • ডিজিটাল মার্কেটিং
  • ভিডিও এডিটিং 
  • গ্রাফিক্স ডিজাইন
  • ওয়েব ডিজাইন 
  • ডাটা এন্ট্রি 
  • ওয়েব ডেভলপমেন্ট
  • অ্যাপ ডেভলপমেন্ট
  • এসইও
  • ট্রান্সলেশন
  • সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট

লেখকের শেষ মন্তব্য 

প্রিয় পাঠক প্রফেশনাল ফাইবার একাউন্ট খোলার নিয়ম কারণ সহ সকল কিছু বিস্তারিতভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। একজন নতুন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে ফাইবারে প্রফেশনাল ভাবে একাউন্ট খোলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ প্রথম ইমপ্রেশনই ভবিষ্যতের কাজ নির্ধারণে ভূমিকা রাখে। 

আশা করি আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি প্রফেশনাল ফাইবার একাউন্ট খোলার নিয়ম বিস্তারিত ভাবে জানতে পেরেছেন। যদি আজকে এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি উপকৃত হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিবেন। এরকম আরো নতুন নতুন আর্টিকেল পেতে আমার ওয়েবসাইটে নিয়মিত ভিজিট করুন। ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url