ডাটা এন্ট্রি অপারেট কাজ কি এবং কিভাবে করতে হয়

প্রিয় পাঠক ডাটা এন্ট্রি অপারেট কাজ কি এবং কিভাবে করতে হয় এই বিষয় নিয়ে অনেকেই ইন্টারনেটে খোঁজাখুঁজি করছেন। তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। কারণ আজকের এই আর্টিকেলে ডাটা এন্ট্রি অপারেট কাজ কি এবং কিভাবে করতে হয় এই বিষয়ে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। 


আপনি যদি আজকের এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়তে পারেন তাহলে ডাটা এন্ট্রি অপারেটর সম্পর্কে সকল তথ্য জানতে পারবেন। তাহলে চলুন শুরু করি

.

ডাটা এন্ট্রি অপারেট কাজ কি 

ডাটা অর্থ তথ্য আর এন্ট্রি অর্থ সংরক্ষণ বা লিপিবদ্ধ করা। অর্থাৎ ডাটা এন্ট্রি বলতে বোঝাচ্ছে কোন তথ্য লিপিবদ্ধ করা বা সংরক্ষণ করে রাখা। ডাটা এন্ট্রি হচ্ছে কম্পিউটার বা ল্যাপটপের সাহায্যে কোন ধরনের তথ্য এক জায়গায় থেকে অন্য জায়গায় স্থানান্তর করার প্রক্রিয়া। ডাটা এন্ট্রি কাজ করার জন্য প্রয়োজন হয় কম্পিউটার ও ইন্টারনেট কানেকশন, এবং যে ব্যক্তি ডাটা এন্ট্রি কাজ করবে সেই ব্যক্তির টাইপিং স্পিড থাকতে হবে।
 ডাটা এন্ট্রির কাজ হল ইলেকট্রনিক ডাটা জব যাচাই-বাছাই এবং সম্পাদন করা। মূলত ডাটাবেজের ডাটা যোগ করা, বিভিন্ন পরিসংখ্যান যোগ করা থেকে শুরু করে নোট অথবা রেকর্ডিং থেকে ডাটা প্রতিলিপি করা ডাটা এন্ট্রির কাজ। আর আপনি যদি ডাটা এন্টির কাজের প্রকারভেদ জানেন তাহলে ডাটা এন্ট্রির কাজ সম্পর্কে নিজে নিজেই ধারণা পেয়ে যাবেন। 

একজন প্রফেশনাল ডেটা এক্সপার্ট ডাটা সম্পর্কিত বিভিন্ন ধরনের কাজ করে থাকেন। এর মধ্যে ডাটা এন্ট্রির প্রধান কাজ গুলো হল-- ডাটা ফরমেটিং, ডাটা ইনপুট করা, ডাটার ভুল সংশোধন করা, সর্বশেষ ডাটাকে একটি নির্দিষ্ট ডাটাবেজে সংরক্ষণ করার 

ডাটা এন্ট্রি অপারেটর এর কাজ কিভাবে করতে হয় 

বর্তমানে এই আধুনিক যুগে প্রায় সব কাজই কম্পিউটারে হয়ে থাকে যার ফলে দিনে দিনে ডাটা এন্ট্রির কাজের পরিধি বেড়েই চলছে। বর্তমানে ডাটা এন্ট্রির কাজ শিখে তথ্য নির্ভর প্রতিষ্ঠানে ডাটা এন্ট্রির অপারেটর হতে পারবেন খুব সহজেই। 

ডাটা এন্ট্রি কাজের জন্য আপনার কোন বড় বড় ডিগ্রীর প্রয়োজন নেই। আপনার কম্পিউটার নলেজ থাকলে এবং কম্পিউটারের টাইপিং এর দক্ষতা থাকলেই আপনি ডাটা এন্টির কাজ খুব সহজেই করতে পারবেন। ডাটা এন্ট্রি অপারেটরের কাজ দুইভাবে করা যায় এগুলো হল--অনলাইন এবং অফলাইন। আসুন অনলাইন এবং অফলাইন এর মাধ্যমে কিভাবে ডাটা এন্টির কাজ করা যায় সে বিষয়ে জেনে নেই--
অনলাইন ডাটা এন্ট্রিঃ

বর্তমান এই ডিজিটাল যুগে অফলাইন ডাটা এন্ট্রি তুলনায় অনলাইন ডাটা এন্টির কাজের চাহিদা দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। অনলাইন ডাটা এন্টির কাজ আপনি খুব সহজে ঘরে বসেই করতে পারবেন। অনলাইন ডাটা এন্ট্রি কাজ আপনি আপনার ফুল টাইম জবের পাশাপাশি পার্ট টাইম জব হিসেবে কাজ করতে পারবেন। 
অনলাইনে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের প্ল্যাটফর্ম যেমন fiverr, freelancer, micro workers, guru এর মাধ্যমে কাজ খুঁজে পাবেন। এই সকল সাইডে আপনাদের কাজ পাওয়ার জন্য অবশ্যই আপনাকে আগে একাউন্ট খুলে নিতে হবে। তারপর আপনাকে কাজ খুঁজে নিতে হবে

অফলাইন ডাটা এন্ট্রিঃ অফলাইন ডাটা এন্ট্রি বলতে সশরীরে যেয়ে কাজ করাকে বোঝায়। অফলাইনে ডাটা এন্ট্রির জন্য যে সকল ডিভাইসের প্রয়োজন হয় সেগুলো কোম্পানি দিয়ে থাকে। সে ক্ষেত্রে নিজের কম্পিউটার না থাকলেও কোন অসুবিধা হয় না। অফলাইন ডাটা এন্ট্রি কাজ করার জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গিয়ে কাজ করতে হয়। এক্ষেত্রে আপনি পার্ট টাইম বা ফুল টাইম দুই রকমই কর্মী হতে পারবেন।

বাংলাদেশের ডাটা এন্ট্রি অপারেটর এর বেতন কত 

ডাটা এন্ট্রি কাজ অনুযায়ী বেতন ভিন্ন হয়ে থাকে। ডাটা কাজের মধ্যে আরও অনেক ধরনের কাজ রয়েছে যেগুলোতে বেতন কমবেশি হয়ে থাকে। ডাটা এন্ট্রি কাজ মূলত দুই ধরনের হয়ে থাকে। অনলাইন ডাটা এন্ট্রি কাজ এবং অফলাইন ডাটা এন্ট্রি কাজ। অনলাইন ডাটা এন্ট্রির কাজ এবং অফলাইন ডাটা এন্ট্রির কাজ হিসেবে বেতনের পার্থক্য হয়। 

অনলাইনে আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস এ ডাটা এন্ট্রির এ কাজ করে থাকেন তাহলে প্রতিমাসে ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকা আয় করতে পারবেন। অনলাইনে ডাটা এন্টির করলে ইনকাম বেশি হয়ে থাকে। আর আপনি যদি বাংলাদেশের কোন কোম্পানিতে ডাটা এন্ট্রির কাজ করে থাকেন তাহলে প্রতি মাসে ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা আয় করতে পারবেন। অনলাইন থেকে অফলাইন ডাটা এন্ট্রির ইনকাম কম হয়ে থাকে।

ডাটা এন্ট্রি কত প্রকার ও কি কি 

বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সিং কাজগুলোর মধ্যে ডাটা এন্ট্রির কাজ সবচেয়ে জনপ্রিয়। বর্তমানে কাজের ধরনের ওপর ভিত্তি করে ডাটা এন্ট্রি কে মূলত সাত ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এগুলো হলো--
মাইক্রোসফট এক্সেলে ডাটা লিপিবদ্ধ (MS-excel data entry) ঃ

  • বিশেষ করে যেকোনো কোম্পানির ক্ষেত্রে তার ক্রয়-বিক্রয়ের হিসাবসহ আনুষঙ্গিক ডাটা বা তথ্যসমূহকে মাইক্রোসফট এক্সেল সফটওয়্যার এর মাধ্যমে digital database তৈরি করা হয়।
  • বানান চেক (Spelling checking) ঃ
  • স্পেলিং চেকিং এর মাধ্যমে বিভিন্ন বই, গল্প, আর্টিকেল, টেক্সট কনটেন্টের বানান যাচাই করা হয় এবং ভুল থাকলে সেটা সংশোধন করা হয়।
  • পেপার ডকুমেন্টশন (Paper documentation) ঃ
  • ডাটা এন্ট্রি কাজগুলোর মধ্যে সবচেয়ে সহজ হচ্ছে পেপার ডকুমেন্টেশন। এই কাজে আপনাকে হার্ডকপি থেকে সফট কপি তৈরি করতে হবে।
  • জব ওয়েবসাইটে জব পোস্টিং (Job posting) ঃ
  • বিভিন্ন ধরনের জব ওয়েবসাইট রয়েছে যেখানে প্রতিদিন নতুন নতুন জব পাবলিশ করা হয়ে থাকে। এটাও এক ধরনের ডাটা এন্ট্রির কাজ।
  • ট্রান্সলেশন (Translation)
  • ট্রান্সলেশন কাজ ডাটা এন্ট্রির মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় কাজ। এ ধরনের কাজে ভয়েস বা অডিও ফাইল থেকে টেক্সট এ টাইপ করে রূপান্তর করা হয়। ট্রান্সলেশন কাজে এক ভাষা ডাটা গুলো অন্য ভাষায় পরিবর্তন করা হয়ে থাকে। অন্য ভাষায় লেখা বই বা যেকোনো আর্টিকেল অনুবাদ করা এবং কম্পিউটারের সেগুলো লিপিবদ্ধ করাই হচ্ছে ট্রান্সলেশন।
  • ডাটা কনভার্সন (Data conversation) ঃ
  • ডাটার ফরমেট পরিবর্তন করা হচ্ছে ডাটা কনভার্সন। পিডিএফ ফাইলকে ওয়ার্ড ফাইলে পরিবর্তন বা ওয়ার্ড ফাইলকে পিডিএফ এ পরিবর্তন করা।
  • ডাটাবেস তৈরি (Database creation) ঃ
  • বিভিন্ন উৎস থেকে ডাটা সংগ্রহ করা হয়। এই ডাটাগুলো ডিজিটাল লিপিবদ্ধ করে ডাটাবেস তৈরি করা হয়।

ডাটা এন্ট্রি কি মোবাইল দিয়ে করা যায়

যদি আপনার একটি স্মার্ট ফোন থাকে তাহলে আপনি ডাটা এন্ট্রির কাজ করতে পারবেন। বর্তমানে বেশ কিছু ওয়েবসাইট রয়েছে সেখানে আপনি আপনার মোবাইল দিয়ে ডাটা এন্ট্রির কাজ করতে পারবেন। এই ওয়েবসাইট গুলোর মধ্যে হচ্ছে এই ওয়েবসাইট গুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে 2 Captcha এর জন্য আপনাকে প্লে স্টোর থেকে 2captcha bot নামক এ্যাপটি আপনার মোবাইলে ডাউনলোড করে নিতে হবে। 
2 Captcha এছাড়াও আরো কিছু ওয়েবসাইট রয়েছে যেগুলো আপনি মোবাইল দিয়ে করতে পারবেন। আপনার কাছে যদি একটি অ্যান্ড্রয়েড ফোন থাকে এবং ইন্টারনেট কানেকশন থাকে তাহলে আপনি আপনার মোবাইলে বিভিন্ন অ্যাপস বা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ডাটা এন্ট্রির কাজগুলো অনায়াসে করতে পারবেন। ডাটা এন্ট্রির কাজগুলো তুলনামূলক ভাবে সহজ এবং খুব কম সময়ে এই কাজগুলো করা যায়। ডাটা এন্ট্রি কাজগুলো মোবাইল ফোন দিয়ে করা সম্ভব।

ডাটা এন্ট্রি অপারেটর কততম গ্রেড 

ডাটা এন্ট্রি অপারেটর ১৬তম অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ১৩তম বা ১৪তম গ্রেডেও এই পদ দেখা যায়। সরকারি সব ধরনের প্রতিষ্ঠানের রয়েছে ডাটা এন্ট্রি অপারেটরের পদ। ডাটা এন্ট্রি অপারেটর পদে তুলনামূলকভাবে বেশি নিয়োগ দেয়া হয়ে থাকে। বাংলাদেশের জাতীয় বেতন স্কেলে ডাটা এন্ট্রি অপারেটরের পদ ১৬ তম গ্রেডের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ডাটা এন্ট্রি পদে সরকারি প্রতিষ্ঠানের করতে চাইলে ন্যূনতম এইচএসসির বা সমমান যোগ্যতা থাকতে হবে। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান স্নাতক পাসও চেয়ে থাকে।

লেখকের শেষ মন্তব্যঃ

প্রিয় পাঠক ডাটা এন্ট্রি অপারেট কাজ কি এবং কিভাবে করতে হয় এই বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। ডাটা এন্ট্রির কাজ পেতে হলে অবশ্যই আপনাকে ডাটা এন্ট্রির কাজ শিখতে হবে। বর্তমানে ডাটা এন্ট্রির কাজের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। 

আশা করি আজকের আর্টিকেলটি পড়ে আপনি ডাটা এন্ট্রি অপারেট কাজ সম্পর্কে সকল বিষয়ে জানতে পেরে আপনি উপকৃত হয়েছেন। যদি আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিবেন। আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url